বাইবেল অদ্বিতীয়

  • ঈশ্বর তাঁর সত্য জোর করে প্রকাশ করেন নি, কোনো দূত দিয়েও ঘোষণা দেন নি বা কোন ভাববাদীকেও আদেশ দেন নি।
  • কিন্তু বাইবেল ৪০জন বিভিন্ন ধরণের লেখক দ্বারা, ৩টি ভাষায় (ইব্রীয়, অরামীয়, গ্রীক), লেখার বিভিন্ন ধরণের মাধ্যমে (ঐতিহাসিক লেখা, আইন-কানুন, কবিতা, ভাববাণী, চিঠি), ১৫০০ বছর ধরে (১৪০৫ খ্রিঃপূঃ থেকে ৯৬ খ্রিঃ পর্যন্ত), ৫টি সাম্রাজ্যের সময়ে (আসিরিয়া, বাবিল, মাদিয়া-পারস্য, গ্রীস ও রোম), ৩টি মহাদেশে (এশিয়া, আফ্রিকা ও ইউরোপ) ও ৭টি দেশে লেখা (ইস্রায়েল, মিসর, ইরান, ইরাক, তুর্কী, গ্রীস ও ইটালী)।
  • তাই বাইবেল বিভিন্ন লেখকের মাধ্যমে বিভিন্ন যুগে বিভিন্ন উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। কি করে সম্ভব যে বাইবেলের পুস্তকের মধ্যে এত মিল আছে, যে বাইবেল একই প্রকাশ, একই চিন্তা ও একই আত্মায় লেখা? তা মানুষের কৌশল বা জ্ঞান-বুদ্ধি দ্বারা সম্ভব নয়।
  • বাইবেল এমন একটি বই যা সবচেয়ে প্রথম ছাপানো, সবচেয়ে বেশি ছাপানো ও পৃথিবীর অন্যান্য বইয়ের চেয়ে সবচেয়ে বেশি অনুবাদিত।

পুরাতন নিয়মের পুস্তক সংগ্রহ (পুরাতন নিয়মের ক্যানোন)                              Old Testament Canon

  • প্রথম শাস্ত্রের লেখক ছিলেন মোশি (যাত্রা ২৪:৪-৭) যিনি শাস্ত্রের লেখা, সংগ্রহ, রক্ষিত রাখা ও সবাইকে শোনাতে শুরু করেছিলেন (দ্বিতীয় বিবরণ ৩১:৯-১৩)। মোশির পরের লেখাগুলি তারই লেখার সাথে যুক্ত করে আবাস-তাম্বুতে সংগ্রহ করে রাখা হত (যিহোশূয় ২৪:২৫-২৬, ১ শমূয়েল ১০:২৫)।
  • যিহূদী ইতিহাসবিদ যোষিফাস ফ্লাভিয়াস বলেন যে ৪৫০ খ্রিষ্টপূর্বে আইন-শিক্ষক ইষ্রা পুরাতন নিয়মের লেখাগুলি সাজিয়ে সংগ্রহটি সম্পন্ন করেন। মালাখি পুস্তক সংগ্রহে যোগ দেওয়ার পরে তাতে আর কোনো পরিবর্তন করা হয় না।
  • যিহূদীরা শাস্ত্রকে খুব সম্মান দেয়, তারা সাবধাণভাবে তার কপি করে, তাদের কপিগুলি যে সঠিকভাবে করা হয়েছে তা নিশ্চিত করার জন্য জটিল কৌশল আছে, তারা লেখা কখনও স্পর্শ করত না, সামান্য দাগ পড়লে স্ক্রল (scroll, মানে গুটিয়ে রাখা কাগজ বা চামড়া) বাদ দেয় এবং ক্রলগুলি সম্মানের সঙ্গে কবর দেয়।
  • ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে ইস্রায়েলের কুম্রান গুহাগুলি আবিষ্কার হয় ও ৯০০টা পুরাতন স্ক্রল পাওয়া যায়। এর মধ্যে সম্পূর্ণ পুরাতন নিয়মের লেখা (যীশু সম্বন্ধীয় ভাববাণীও) পাওয়া যায়। লেখাটির আধুনিক লেখার সাথে সম্পূর্ণ মিল আছে। স্ক্রলের তারিখ হল ১০০ খ্রিষ্টপূর্ব। তাই পুরাতন নিয়মের লেখাগুলি অবিতর্কনীয়। যীশুর সময়ের আগেই এই বিষয়ের প্রমাণ পাওয়া যায়। ছবি: কুম্রান গুহা, কুমরান স্ক্রল।
  • যিহূদী শাস্ত্রে ও আমাদের ‘পুরাতন নিয়ম’ একই ৩৯টি পুস্তক আছে। কিন্তু সেগুলি ভিন্নভাবে সাজানো (আলাদা হ্যান্ডাউট দেখুন)।
  • নতুন নিয়মের লেখকেরা ৩০০ বারের চেয়ে বেশি বার পুরাতন নিয়মকে উদ্ধৃতি করেন, পুরাতন নিয়মকে ‘ঈশ্বরের বাক্য’ বলেন ও লেখার অধিকার স্বীকার করেন।
  • যীশু একটি বাদে সমস্ত পুরাতন নিয়মের পুস্তক থেকে উদ্ধৃতি করেন, পুরাতন নিয়মকে ‘ঈশ্বরের বাক্য’ বলেন ও লেখার অধিকার স্বীকার করেন।
  • ২৫০ খ্রিষ্টপূর্বে মিসরের আলেকসান্দ্রিয়ায় ৭০জন যিহূদী পণ্ডিত পুরাতন নিয়ম গ্রীকে অনুবাদ করেন। এই অনুবাদের নাম সেপ্টুয়াজিন্ট। তারা পুস্তকগুলি ভিন্নভাবে সাজায় (আধুনিক পুরাতন নিয়মে যেমন)। 
  • ছবি: সেপ্টুয়াজিন্টের একটি টুকরা (২০০-১০০ খ্রিষ্টপূর্ব)। কথাটি ক্ষুদ্র ভাববাদীদের লেখা থেকে।

পুরাতন নিয়মের 'আপোক্রিফা' Old Testament Apocrypha

  • ‘আপোক্রিফা’কে বলা হয় ৩০০ খ্রিষ্টপূর্ব থেকে ১০০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত যিহূদী ধর্মীয় লেখাগুলির একটি সংগ্রহশালা। যিহূদীরা আপোক্রিফাকে হয়তো পড়ত ও জানত, কিন্তু কখনও এটাকে ‘ঈশ্বরের বাক্য’ বা ‘অধিকারগত লেখা’ মনে করে নি। তাই আপোক্রিফা কখনও পুরাতন নিয়মের ক্যানোনের অংশ ছিল না।
  • যখন ২৫০ খ্রিষ্টপূর্বে সেপ্টুয়াজিন্টের (Septuagint) অনুবাদ হয়েছিল তার সাথে আপোক্রিফাও অনুবাদ করা হয় এবং আপোক্রিফা পরিশিষ্ট হিসাবে সেপ্টুয়াজিন্টে যোগ দেওয়া হয়।
  • যীশু এবং সমস্ত নতুন নিয়মের লেখকেরা পুরাতন নিয়মের ৩০০ উদ্ধৃতি করেন কিন্তু আপোক্রিফা থেকে একবারও উদ্ধৃতি করেন নি।
  • বাইবেলের প্রথম ল্যাটিন ভাষার অনুবাদ (তার নাম ‘ভুল্গাটা’, Vulgata), সেপ্টুয়াজিন্ট থেকে অনুবাদ করা হল। সেপ্টুয়াজিন্টের সাথে আপোক্রিফাও অনুবাদ করা হল ও ভুল্গাটায় যোগ দেওয়া হল।
  • মণ্ডলীর আদিপিতারা (জেরোম, ওরিগেন, যিরূশালেমের সিরিল, আথানাসিয়াস, ..) যিহূদীদের সাথে একমত ছিল যে আপোক্রিফার অধিকার কম।
  • যখন ইউরোপে পুনসংস্কার চলছিল (১৫১৭ খ্রিষ্টাব্দ থেকে) পুনঃসংস্কারের নেতারা আপোক্রিফা থেকে নেওয়া কিছু ক্যাথলিক শিক্ষা অগ্রাহ্য করেছিলেন। তার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে ক্যাথলিক নেতারা ১৫৪৬ খ্রিষ্টাব্দে ত্রেন্ট শহরে একটি সভায় (Council of Trent) সিদ্ধান্ত নেন যে ক্যাথলিক মণ্ডলীতে আপোক্রিফাকে অন্য শাস্ত্রের মত ‘অধিকারগত বাক্য’ হিসাবে দেখা হবে। প্রটেস্টান্টরা আপোক্রিফাকে অগ্রাহ্য করে এবং প্রটেস্টান্ট বাইবেলে তা অধিকারগত পুস্তকের সাথে ছাপায় না।
  • ডানের ছবি: পুরাতন নিয়মের আপোক্রিফার লেখাগুলোর একটি তালিকা ও বর্ণনা।

বামের ছবিতে একটি নজরে ৪টি সংগ্রহ এবং তাতে পুস্তকের ধারাবাহিকতা দেখানো হয়েছে।

১। ইব্রীয় শাস্ত্র (যিহূদীদের ‘পুরাতন নিয়ম’), ৪৫০ খ্রীষ্টপূর্ব

২। সেপ্টুয়াজিন্ট, অর্থাৎ ২৫০ খ্রীষ্টপূর্বে ইব্রীয় শাস্ত্রের গ্রীক অনুবাদ ও আপোক্রিফা যোগ, লাল রং)

৩। ল্যাটিন ভুল্গাটার পুরাতন নিয়ম যা ৪০০ খ্রীষ্টাব্দে সেপ্টুয়াজিন্টের ভিত্তিতে অনুবাদ করা হয়েছিল (আপোক্রিফা যোগ দেওয়া, লাল রং)।

৪। প্রটিস্টান্ট পুরাতন নিয়ম কমবেশি ১৫২৫ খ্রীষ্টাব্দে (আপোক্রিয়া বাদ দেওযা হয়েছে)।

নতুন নিয়মের সংগ্রহ (নতুন নিয়মের ক্যানোন) New Testament Canon

  • প্রথম মণ্ডলী পুরাতন নিয়মকে ‘ঈশ্বরের অধিকারগত বাক্য’ হিসাবে বুঝত, গুরুত্ব দিত, ঘনঘন উদ্ধৃতি করত ও যীশুকে ‘পুরাতন নিয়মের পূর্ণতা’ হিসাবে বুঝত। ২ তীমথিয় ৩:১৬ বলে ‘পবিত্র শাস্ত্রের প্রত্যেকটি কথা ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছে এবং তা শিক্ষা, চেতনা দান, সংশোধন এবং সৎ জীবনে গড়ে উঠবার জন্য দরকারী’
  • যখন প্রথম সুসমাচারগুলি ও নতুন নিয়মের চিঠিগুলি লেখা হয়, বিশ্বাসীরা এইগুলি পুরাতন নিয়মের মত ‘ঈশ্বরের অধিকারগত বাক্য’ হিসাবে বুঝত। ২ পিতর ৩:১৫-১৬ পদ বলে ‘প্রিয় ভাই পৌলও .. লিখেছেন .. যাদের মন অস্থির তারা অন্যান্য শাস্ত্রের মত এগুলোর মানেও ঘুরিয়ে বলে’২ পিতর ১:২০-২১ .. ‘শাস্ত্রের মধ্যেকার কোন কথা নবীদের মনগড়া নয়, কারণ নবীরা তাঁদের ইচ্ছামত কোন কথা বলেন নি; পবিত্র আত্মার দ্বারা পরিচালিত হয়েই তাঁরা ঈশ্বরের দেওয়া কথা বলেছেন’
  • নতুন নিয়মের পুস্তকগুলি লেখার সাথে সাথে বিভিন্ন মণ্ডলীর চাহিদা ছিল যেন তারা অন্য মণ্ডলী যে চিঠি পেয়েছিল, এর একটি কপি পেতে পারে। পৌল চিঠির অদলবদলকে উৎসাহিত করতেন (কলসীয় ৪:১৬)। শীঘ্র বিভিন্ন জায়গায় পুস্তকের সংগ্রহগুলি শুরু হতে থাকল।
  • ধারণা করা হয় যে, ইতিমধ্যে ৮৫ খ্রিষ্টাব্দে পৌলের সমস্ত চিঠির একটি সংগ্রহ প্রচলিত ছিল যাকে ‘পৌলীন কর্পুস’ (Pauline Corpus) বলা হয়। ৪টি সুসমাচারের একটি সংগ্রহ পাওয়া যায় যার তারিখ ১৫০ খ্রিঃ
  • নতুন নিয়মের সবচেয়ে পুরাতন হস্তলিখিত পুস্তক ৯৬ খ্রিষ্টাব্দের এবং ১২৫ খ্রিষ্টাব্দের। তাই এমন সময় যখন যীশুর কয়েকজন চোখের সাক্ষী এখনও জীবিত, সে সময় থেকেই আমাদের পুরাতন হস্তলিখিত পুস্তক আছে। 
  • বামের ছবি: Chester-Beatty Papyrus, ফিলিপীয় ও কলসীয়।
  • নতুন নিয়মের সংগ্রহ (একটি দুটি পুস্তক বাদে) ১৭০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে পাওয়া যায়।

একটি লেখাকে 'ঈশ্বরের অধিকারগত বাক্য' হিসাবে গ্রহণ করার শর্তগুলি কি কি ছিল? Criteria for Canonization

  • মণ্ডলীকে যখন বিভিন্ন ধরণের ভ্রান্ত শিক্ষার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হত, তারা প্রয়োজন মনে করল যে সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নেয়, কি সঠিক, কি ভ্রান্ত, কি অধিকার গত, কি অন্য ধরণের লেখা। > এইভাবে নতুন নিয়মের অধিকারগত সংগ্রহ (নতুন নিয়মের ক্যানোন) তৈরি হল।
  • কিভাবে বুঝা যায় একটি লেখা ‘ঈশ্বরের অধিকারগত বাক্য’? এটি প্রমাণ করার জন্য কয়েকটি শর্ত রাখা হত:
    • প্রৈরিতিক অধিকার – পুস্তক একজন প্রেরিত বা চোখের সাক্ষী র দ্বারা লিখিত কিনা? ১২জন শিষ্যদের লেখা .. অথবা পৌলের (যিনি সরাসরি ঈশ্বর কাছ থেকে প্রৈরিতিক অধিকার পেয়েছিলেন (গালাতীয় ১:১৬, ১ করিন্থীয় ১৪:৩৭) .. অথবা এমন একজন, যিনি একজন প্রেরিতের বহুবছরের শিষ্য ও সহকর্মী (যেমন মার্ক বা লূক)।
    • পুরাতন নিয়ম ও নতুন নিয়মের অন্যান্য অধিকারগত শিক্ষার সাথে মিল থাকতে হবে বা গ্রহণযোগ্য মতবাদ থাকতে হবে।
    • লেখাটির উপকার ও কার্যকারিতার ব্যবহারিক প্রমাণ থাকতে হবে। ব্যবহারিক মাণ্ডলিক জীবনে জীবনদায়ী ও পরিবর্তনকারী বাক্য হিসাবে প্রমাণিত হতে হবে।
    • মণ্ডলী ও মণ্ডলীর আদিপিতারা যেন পুস্তকটির অধিকার নিয়ে একমত হয়। প্রকৃতপক্ষে তা আশ্চর্যের বিষয় যে, মণ্ডলীতে (যারা আমরা কিছুতেই একমত হতে পারি না) শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে বাইবেল নিয়ে কোন তর্ক নেই!
  • নতুন নিয়মের পুস্তকের লেখা, সংগ্রহ করা ও তার অধিকার বুঝাতে প্রধান ভূমিকা ছিল পবিত্র আত্মার। মণ্ডলীর সভায় আদিপিতারা ‘পুস্তককে অধিকার দিলেন’ তা নয়, বরং আদিপিতারা যে অধিকার একটি পুস্তকের পবিত্র আত্মার দ্বারা ছিল সে অধিকার তারা ‘স্বীকার করলেন’।
  • বাইবেল ভীষণ অত্যাচারের মধ্যেও টিকে ছিল (যেমন ৩০৩ খ্রিষ্টাব্দে রোমীয় সম্রাট ডিয়োক্লেটিয়ান (Diocletian)-এর অত্যাচার, সমস্ত শাস্ত্র পোড়ানোর আদেশ)।

নিচে দেওয়া হয়েছে নতুন নিয়মের পুস্তকগুলো থেকে উদ্ধৃতি, পুস্তগুলোর উল্লেখ, অনুমোদন, সংগ্রহ ও অনুবাদ। লক্ষ্য করুন যে ইতিমধ্যে ১৭০ খ্রীষ্টাব্দে ৪টি চিঠি বাদে নতুন নিয়মের সংগ্রহ সম্পূর্ণ হয়েছে।

নতুন নিয়মের আপোক্রিফা New Testament Apocrypha

নতুন নিয়মের আপোক্রিফা বলা হয় একটি খ্রিষ্টান লেখকদের রচনার সংগ্রহকে (১০০-৪০০ খ্রিষ্টাব্দ)। উভয় ক্যাথলিক এবং প্রটেস্টান্টেরা নতুন নিয়মের আপোক্রিফাকে কখনও ‘ঈশ্বেরর অধিকারগত বাক্য’ মনে করত না ও ক্যানোনে রাখতে রাজী ছিল না। এই লেখাগুলি হয়তো উপকারী, যেমন একটি আধুনিক খ্রিষ্টান বই উপকারী হতে পারে।

হস্তলিখিত পুস্তকের সংরক্ষণ Manuscript Preservation

  • নতুন নিয়মের সবচেয়ে পুরাতন হস্তলিখিত পুস্তক ৯৬ এবং ১২৫ খ্রিষ্টাব্দের। তাই এমন সময় যখন যীশুর কয়েকজন চোখের সাক্ষী এখনও জীবিত, সে সময় থেকেই আমাদের পুরাতন হস্তলিখিত পুস্তক আছে।
  • ২৪’০০০এর উপরে স্ক্রল, ঘোটানো কাগজ, হস্তলিখিত পুস্তক বা পুস্তকের কপি বা টুকরাগুলি আবিষ্কার হল। এই হাজার হাজার লেখার মধ্যে প্রায় ১০০ ভাগ মিল পাওয়া গেল।
  • এর পাশাপাশি মণ্ডলীর আদিপিতারা তাদেরই লেখায় অনেক নতুন নিয়মের উদ্ধৃতি করতেন, এমন কি ৩৬’০০০ পদের উদ্ধৃতি তাদের লেখায় পাওয়া যায়। তারা এত বেশি উদ্ধৃতি করতেন যে নতুন নিয়মের মাত্র ১১টা পদ বাকি ছিল উদ্ধৃতি করতে।
  • নতুন নিয়মের মত ঐ সময়ের আর কোন লেখা নেই যার এত বেশি হস্তলিখিত কপি পাওয়া যায়। নতুন নিয়মের ৩৭ বারের কম কপি বা টুকরা পাওয়া যায় গ্রীক কবী হোমেরের লিখিত বই ‘ইলিয়াড’এ। অন্যান্য লেখা এর চেয়ে আরো অনেক কম। জুলিয়াস কৈসর নামে কেউ কি ছিলেন? জুলিয়াস কৈসরের অস্থিত্বের প্রমাণ নতুন নিয়মের চেয়ে অনেক কম, অন্তত ২০০ বারেরও কম সাক্ষ্য তথ্য পাওয়া যায়।

 

লেখক (লেখার নাম)

চনা করার সাল

বচেয়ে পুরাতন

কপির তারিখ

চনা থেকে পুরাতন কপি পাওয়া পর্যন্ত কত বছর লেগেছিল

র্বমোট কতটা কপি

পাওয়া গেল

কৈসর Caesar

০০৪৪ খ্রিঃপূঃ

০০ খ্রিঃ (মধ্যযুগ)

০০০ বছর

টা

লীভী Livy

৫৯খ্রিঃপূঃ ১৭ খ্রিঃ

০০ খ্রিঃ

২০০ বছর

২০ টা

প্লেটো (টেত্রালজিস) Plato

৪২৭ ৩৪৭ খ্রিঃপূঃ

১১০০ খ্রিঃ

০০০ বছর

৭ টা

টাকিটাস (এ্যানাল্স) Tacitus

০০ খ্রিঃ

১০০০ খ্রিঃ

৯০০ বছর

টা

প্লীনী জুনিয়ার (ইতিহাস) Pliny

৬১১১৩ খ্রিঃ

৮৫০ খ্রিঃ

৭৫০ বছর

১ টা

থুসিদিডেস (ইতিহাস) Thucydides

৬০৪০০ খ্রিঃপূঃ

০০ খ্রিঃ

৩০০ বছর

৭ টা

সুএটোনিয়াস (ডে ভিট্যা কেসারুম)

৭৫১৬০খ্রিঃ

৫০ খ্রিঃ

৮০০ বছর

৮ টা

হেরোদোটাস (ইতিহাস) Herodotus

৪৮০৪২৫খ্রিঃপূঃ

০০ খ্রিঃ

৩৩০ বছর

৮ টা

হোমের (ইলিয়াড) Homer

০০ খ্রিঃপূঃ

৪০০ খ্রিঃপূঃ

৫০০ বছর

৪৩ টা

তুন নিয়ম New Testament

১০০ খ্রিঃ

২৫ খ্রিঃ

বছর

০০০এর চেয়ে বেশি

  • অনেকে বলেন যে বাইবেলের লেখা শতাব্দের পর শতাব্দে পরিবর্তিত বা নষ্ট হয়েছে। কুম্রান স্ত্রলের আবিষ্কারের ফলে পুরাতন নিয়মের সংরক্ষণ একেবারে অবিতর্কনীয়।
  • নতুন নিয়মের লেখার সংরক্ষণ ব্যবস্থা প্রমাণিত হয়েছে কারণ এটির অত্যন্ত পুরানো ও অনেক বেশি হস্তলিখিত পুস্তক বা কপি বা টুকরা পাওয়া গেছে। ২৪’০০০ কপির মধ্যে ও আর ৩৬’০০০ উদ্ধৃতির মধ্যে এমন মিল পাওয়া যায় যে নতুন নিয়মের লেখার সংরক্ষণও অবিতর্কিত বিষয় হয়ে যায়।
  • অল্প কিছু পদে ভিন্নতা পাওয়া গেল কিন্তু তার মধ্যে একটি পদও নেই যা ভিত্তিক মতবাদ সম্বন্ধীয়। যেখানে ভিন্নতা পাওয়া যায় আমাদের বাইবেলে তা পাদটীকা (footnote) দিয়ে দেখানো হয়।
  • যদি আমরা নতুন নিয়মের সাক্ষ্য তথ্য মানতে না চাই তবে আমাদের তাও বলতে হবে যে আমরা ঐ যুগ সম্বন্ধে কিছুই জানি না।