শিক্ষা
প্রথম ইউনিটে আমরা তীত চিঠির লক্ষ্য করেছি। আমরা অনেক কিছু খুঁজে পেলাম, অনেক লোকদের নাম, জায়গা, সময় জাতীয় শব্দ, পুনরুক্তি বিষয়, পার্থক্য, সংযোগ এবং আদেশ। এখন আমরা ব্যাখ্যা নিয়ে শুরু করব, ইণ্ডাক্টিভ মেথদের ২য় ধাপ। ব্যাখ্যা মানে “চিঠির প্রথম পাঠকদের কাছে এর অর্থ কি ছিল?” যারা এই চিঠি প্রথম হাতে পেয়েছিলেন, তারা তা পড়ে কি বুঝেছিলেন।
এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গেলে আমাদের আরো কিছু প্রস্তুতি নিতে হবে, চিঠির পিছনে সম্পূর্ণ গল্প বের করতে হবে: লেখক কে? তীত কে? তিনি কোথায় আছেন যখন পৌলের এই চিঠি পান? ঐতিহাসিক পরিস্থিতি কেমন? আমরা প্রশ্ন পর প্রশ্ন আগাব:

১ম ব্যাখ্যা প্রশ্ন লেখক কে?
নির্দেশনা
তীত ১:১ পড়ুন। চিঠির লেখক কে?
শিক্ষা
আমরা তীত ১:১ পদ থেকে শিখতে পারি যে পৌল এই চিঠির লেখক? পৌল ঐযুগের প্রচলিত গ্রীক ধরণ অনুসারে এই চিঠি লেখেন: তিনি প্রথম নিজের পরিচয় দেন (তীত ১:১-৩), প্রাপককে উল্লেখ করেন (তীত ১:৪), আশীর্বাদ দেন (তীত ১:৪) এবং পরবর্তীতে চিঠির প্রধান অংশ দেন (তীত ১:৫-৩:১১)। শেষে তিনি ব্যবহারিক নির্দেশনা দেন (তীত ৩:১২-১৪), শুভেচ্ছা পাঠান (তীত ৩:১৫) এবং তাদেরকে একটি চূড়ান্ত আশীর্বাদ দেন (তীত ৩:১৫)।
পৌলের জীবন ও চরিত্র আরো ভালভাবে বুঝার জন্য আমাদের প্রেরিত পুস্তক ও পৌলের অন্যান্য চিঠি সব পড়তে হত। তার চেয়ে আমরা মাত্র পৌলের জীবনের একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা বিবেচনা করি যা নতুন নিয়মের বিভিন্ন পদ থেকে তৈরি হয়েছে:
২য় ব্যাখ্যা প্রশ্ন পাঠকেরা কি? কে মণ্ডলীগুলো স্থাপন করেছিলেন?
নির্দেশনা
তীত ১:৪ পদ পড়ুন। চিঠির প্রাপক কে? লেখক প্রাপকের কি বর্ণনা দেন?
উত্তর
পৌল এই চিঠি তীতের কাছে লেখেন। তিনি তীতকে “আমার সেই সত্যিকারের সন্তান তীত”।
নির্দেশনা
তীত ১:৪ পদ পড়ুন। চিন্তা করুন: যদি পৌল একজনকে “সত্যিকারের সন্তান” বলেন, তার অর্থ কি?
বিবেচনা করুন
পৌলের স্ত্রী নেই (১ করি ৯:৫-৬), তাই “সন্তান” এখানে রূপক অর্থ ব্যবহৃত: হতে পারে তীত পৌলের মধ্য দিয়ে সুখবর পেয়েছিলেন এবং পৌলের মধ্য দিয়ে শিষ্যত্ব পেয়ে তার সহকর্মী হয়েছিলেন। “সন্তান” মানে বহুদিনের ঘনিষ্ট সম্পর্ক, স্নেহ, বিশ্বাস। বাবা-সন্তান বলে একটি অপরিবর্তনশীল সম্পর্ক বুঝায়, যেখানে একজন অন্যের প্রতিনিধি, পৌলের অধিকার তীতেরও থাকে। “সত্যিকারের সন্তান” মানে তীত হলেন একজন বিশ্বস্ত, বিশ্বাসযোগ্য সহকর্মী।
নির্দেশনা
তীত ১:৫ পদ পড়ুন। তীত চিঠি বুঝতে চাইলে এই পদ অনেক গুরুত্বপূর্ণ। পৌলের কথার অর্থ কি? গুরুত্ব কি? এই পদ থেকে নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দিতে চেষ্টা করুন:
- ক্রীট দ্বীপের মণ্ডলীগুলো কে কে স্থাপন করেছিলেন?
- ক্রীট দ্বীপের মণ্ডলীগুলো এইমাত্র না কি কিছু বছর আগে স্থাপন করা হয়েছিল?
- পৌল তীতকে ঠিক কি কি করতে বলেন?
- তীত ৩:১২ পদ বিবেচনা করে আর কি বুঝা যায়?
- পৌল চিঠির সব কথা তীত কেন লিখে পাঠান? তিনি কি রওনা দেওয়ার আগে তা মৌখিকভাবে তীতকে বলেন নি? তাহলে লেখার কিপ্রয়োজন ছিল?
শিক্ষা
ক্রীট দ্বীপের মণ্ডলীগুলো একেবারে নতুন স্থাপিত। পৌল ও তীত শহরে শহরে সুখবর প্রচার করেছেন এবং নতুন মণ্ডলী স্থাপন করা হয়েছে, কিন্তু পৌল এখনও নেতৃত্ব স্থাপন করার জন্যও সময় পান নি। পৌল নেতৃত্ব স্থাপন করার কাজ পৌল সাধারণত বেশ তাড়াতাড়ি করেন (যেমন প্রেরিত ১৪:২৩ পদে বুঝা যায়)। ক্রীটীয় মণ্ডলীতে এখনও নেতৃত্ব স্থাপন করা হয় নি মানে যে মণ্ডলী একদম নতুন স্থাপিত। হয়তো পৌলকে কোনো জরুরী কাজ বা বিশেষ কারণে তাড়াতাড়ি রওনা দিতে হয়েছিল। একারণে তিনি দায়িত্ব তার বিশ্বস্ত বহুবছরের সমকর্মী তীতের কাছে হস্তান্তর করেন যিনি সম্ভবত পৌলের সাথে মণ্ডলীগুলোর সহ-স্থাপক। পৌল চান যেন তীত “অসম্পূর্ণ কাজ” পূর্ণ করেন (তীত ১:৫) এবং যখন পৌল আর্তিমা বা তুখিক পাঠাবেন (তীত ৩:১২) তখন যেন তীত নীকোপলিতে এসে পৌলের সাথে পুনরায় যোগ দেন।
কিন্তু কেন পৌল এসব নির্দেশনাগুলো তীতের কাছে চিঠি হিসাবে লেখেন? তিনি তো রওনা দেওয়ার আগে অবশ্যই তীতের সাথে সরাসরি কথা বলেছেন। তাই চিঠি ঠিক কি সের জন্য প্রয়োজন এবং ঠিক কার জন্য প্রয়োজন?
চিন্তা করে পরিষ্কার হয়ে যায় যে চিঠিটি বিশেষভাবে ক্রীটীয় মণ্ডলীগুলোর জন্য প্রয়োজন। চিঠির গুরুত্ব তীতের কাছে নির্দেশনা মাত্র নয়, তা হল তীতের কাছে সব বিশ্বাসীদের সামনে দায়িত্ব ও অধিকার হস্তান্তর। পৌল চান যেন সব বিশ্বাসীরা পরিষ্কারভাবে জানে যে তিনি তীতকে নিজের পরিবর্তে রেখেছেন, যেন তারা বোঝে তীত কোন কারণে এখন নেতা বহাল করতে যাচ্ছেন এবং যেন তারা এই প্রক্রিয়ায় যেন বিশ্বাসীরা তীতকে সমর্থন করে। তীত ২:১৫ পদ দেখায় যে তীতকে এভাবে অধিকার দান করা এব তাকে মণ্ডলীগুলোর সামনে অনুমোদন দেওয়া প্রয়োজন: “সেইজন্য পূর্ণ অধিকার নিয়ে তুমি এই সব বিষয়ে শিক্ষা দাও, উপদেশ দাও ও দোষ দেখিয়ে দাও। কেউ যেন তোমাকে তুচ্ছ না করে”। পৌল ভালভাবে জানেন যে এমন লোক আছে যারা তীতের নেতৃত্ব ও প্রভাবের বিরুদ্ধে দাঁড়াবে।
তীত চিঠিকে “পালকীয় চিঠি” বলা হয়, অর্থাৎ এমন চিঠি যা একজন মণ্ডলীর নেতার কাছে লেখা।
তাই তীত চিঠি প্রাথমিকভাবে তীতের কাছে লেখা এবং পৌল এভাবে তীতকে অধিকার দান করেন, তাকে নির্দেশনা ও উৎসাহ দেন যেন তিনি সত্যি শিক্ষা দিতে থাকেন এবং যোগ্য লোকদের মণ্ডলীর নেতাদের হিসাবে নিযুক্ত করেন। কিন্তু তীত পুস্তক ক্রীটীয় মণ্ডলীগুলোর কাছে একটি চিঠিও বটে, যেন নতুন ক্রীটীয় বিশ্বাসীরা শিক্ষা ও নির্দেশনা পায়, যেন তারা সঠিক কাজে ও মনোভাবে উৎসাহ পায় এবং তীতের নেতৃত্ব মেনে নিয়ে তাকে সমর্থন করবে যখন তিনি পৌলের কথা অনুসারে নেতাদের নিযুক্ত করেন।
তীত পুস্তকের ব্যাখ্যা যখন করেন তখন সব সময় উভয় শ্রোতাদের নিয়ে চিন্তা করুন: কেন পৌল কথাটি তীতকে বলেন? কেন পৌল কথাটি ক্রীটীয় মণ্ডলীদের বলেন?
৩য় ব্যাখ্যা প্রশ্ন তীত কে?
শিক্ষা
তীতের নাম নতুন নিয়মে কমবেশি ২০টি পদে পাওয়া যায়। আমরা সেগুলো অধ্যয়ন করে তীতের জীবন, পরিচর্যা ও চরিত্র নিয়ে চিন্তা করব। তীতের জীবনের একটি সময় তালিকাও সাথে পাওয়া যাবে।
নির্দেশনা
নিচে দেওয়া পদগুলো পড়ুন এবং পারিপার্শ্বিক অবস্থা সম্বন্ধীয় তথ্যও বিবেচনা করুন। চিন্তা করুন: আমরা পদটি থেকে তীত সম্বন্ধে, অর্থাৎ তার জীবন, পরিচর্যা, চরিত্র বা ব্যক্তিত্ব সম্বন্ধে কি কি শিখতে পারি?
- গালাতীয় ২:১-৩ এবং প্রেরিত ১১:১৯-২৬
- ২ করিন্থীয় ২:১২-১৩ এবং ৭:১৩-১৫
- ২ করিন্থীয় ৮:১৬-১৭, ৮:২৩ এবং ১২:১৭-১৮
- ২ করিন্থীয় ৮:৬
- ২ তীমথিয় ৪:১০
নির্দেশনা
গালাতীয় ২:১-৩ এবং প্রেরিত ১১:১৯-২৬ পদ পরুন। চিন্তা করুন: এই পদগুলো থেকে আপনি তীতের জীবন, তার চরিত্র, মনোভাব এবং ব্যক্তিত্ব সম্বন্ধে কি শিখতে পারেন?
বিবেচনা করুন
তীত গ্রীক, অর্থাৎ তিনি অযিহূদী এবং তাই সুন্নত-করা ব্যক্তি নন। যিহূদীদের এবং যিহূদী সংস্কৃতি তীত ছোটবেলা থেকে জানেন কিনা, তা বলা যায় না। তিনি বিশ্বাসী হয়ে যান (সম্ভবত সিরিয়ার আন্তিয়খিয়ায় শহরে থাকতে) এবং বার্ণবা ও পৌল তাকে শিষ্যত্ব দেন এবং সহকর্মী হিসাবে গঠন করেন। তিনি বিশ্বস্ত ব্যক্তি বলে বার্ণবা ও পৌলের সাথে যান যখন আন্তিয়খিয়া মণ্ডলী যিরূশালেমে মণ্ডলীর জন্য দুর্ভিক্ষ চলছে বলেই একটি আর্থিক দান পাঠায়। যখন তীত এভাবে যিরূশালেমে যান তার প্রেরিতদের সাথে দেখা হয় কিন্তু তাকে সুন্নত গ্রহণ করতে বাধ্য করানো হয় না। রোমীয় ইতিহাস অনুসারে এই দুর্ভিক্ষ ৪৭ খ্রীষ্টাব্দে ঘটে এবং তীতের এই যাত্রাও কমবেশি সেই সময় ঘটে।
নির্দেশনা
২ করিন্থীয় ২:১২-১৩ এবং ৭:১৩-১৫ পদ পড়ুন। এই পদগুলোর বিষয়ে কিছু ভূমিকা: পৌলের যখন ৫৬ খ্রীষ্টাব্দে করিন্থীয় মণ্ডলীর সাথে এমন একটি কষ্টের দ্বন্দ্বে হয়ে উঠে যার কারণে পৌল নিজেই করিন্থে যাওয়া আর সাহস পাচ্ছেন না তখন তিনি এই তীতকে করিন্থ মণ্ডলীর কাছে পাঠান আশা করে যে তিনি সমস্যাগুলো সমাধান এবং সুসম্পর্ক পুনরায় স্থাপন করতে পারেন। পৌল অনেক দুশ্চিন্তিত অবস্থায় ত্রোয়াতে তীতের জন্য অপেক্ষা করেন এবং ম্যাসিদোনিয়ায় তার দিকে রওনাও দেন। যখন তীত করিন্থ থেকে এসে পৌলকে ভাল খবর দেন যে মণ্ডলী অনুতাপের পথে পা দিয়েছে তখন পৌল অত্যন্ত খুশি। তিনি উত্তরে একটি চিঠি লেখেন (যা আমরা “২ করিন্থীয়” বলি) এবং চিঠিতে তীতের হাত দ্বারা করিন্থে পাঠান।
২ করিন্থীয় ২:১২-১৩ এবং ৭:১৩-১৫ পদ পড়ুন এবং চিন্তা করুন এই পদগুলো থেকে তীত সম্বন্ধে, অর্থাৎ তার জীবন, পরিচর্যা, চরিত্র বা ব্যক্তিত্ব সম্বন্ধে কি কি শেখা যায়?
বিবেচনা করুন
তীত যে এই ধরণের কঠিন দ্বন্দ্বের সময়ে করিন্থ মণ্ডলীর কাছে বেড়াতে যান (যতদূর আমরা জানি তিনি আগে থেকে করিন্থীয় বিশ্বাসীদের সাথে পরিচিত নন), তা থেকে আমরা বুঝতে পারি যে তীতের সাহস আছে। এভাবে আর একজনের দ্বন্দ্বে হাত দেওয়া কঠিন বিষয় এবং এখানে সফল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি নেই। তীত তারপরেও তা চেষ্টা করতে রাজি, যা থেকে আমরা বুঝতে পারি যে তিনি পৌলকে ভালবাসেন এবং পৌলের দুশ্চিন্তা দেখে সাহায্য করতে চান।
পৌল যে তীতকে এই সুক্ষ বিষয়ের জন্য পাঠান দেখায় যে, তীতের উপরে পৌলের কত বড় আশা ও বিশ্বাস আছে। তীত যে এই ধরণের কঠিন সময়ে করিন্থে গিয়ে দ্বন্দ্ব সমাধানের দিকে নিয়ে আসতে পারেন, অর্থাৎ পৌলের বিষয়ে করিন্থীয় বিশ্বাসীদের মনোভাব পরিবর্তিত করতে সক্ষম হন, তা দেখে আমরা তীতের চরিত্র ও মনোভাব সম্বন্ধে অনেক কিছু বুঝতি পারি: তিনি এমন লোক অন্যদের চোখে সহজে বিশ্বাসযোগ্যতা পান। তিনি মাথা ঠাণ্ডা লোক, মিশতে জানেন, সুন্দরভাবে অন্যদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে জানেন, তিনি সহজে অন্যদের কষ্ট বুঝতে পারেন। তার হৃদয় ও মনোভাব পৌলের মত, কিন্তু সম্ভবত তার ব্যক্তিত্ব পৌলের চেয়ে কোমল। তিনি সহজে অপমানিত হন না, সহজে ভুল ধরে না বরং ভাল সম্পর্ক স্থাপন করতে জানেন। সম্ভবত তিনি ভাল শ্রোতা, তিনি যত্নশীল, তিনি অন্যদের বুঝতে পারেন এবং সহমর্মিতা দেখান। তিনি প্রজ্ঞাবান, তার ভাল বিচার বুদ্ধি আছে এবং তিনি ভাল পরামর্শদাতা।
নির্দেশনা
২ করিন্থীয় ৮:১৬-১৭, ৮:২৩ এবং ১২:১৭-১৮ পদ পড়ুন। এই পদগুলোও করিন্থীয় বিশ্বাসীদের সাথে পৌলের এই দ্বন্দ্ব ও তীতের সমাধান করার প্রচেষ্টা সম্বন্ধীয়। এই পদগুলো থেকে আপনি তীতের জীবন, চরিত্র, মনোভাবে ও ব্যক্তিত্ব সম্বন্ধে আরো কি কি শিখতে পারেন?
বিবেচনা করুন
সম্ভবত তীত বেশির্ভাগ পৌলের কারণেই করিন্থে যান এবং কারণ তিনি প্রেরিত হিসাবে সাধারণভাবে মণ্ডলীর জন্য যত্নশীল। কিন্তু যখন তিনি করিন্থীয়দের সঙ্গে পরিচিত হন, তিনি সাহায্য করার জন্য আরো আগ্রহী হয়ে ওঠেন। তীতের আচার-ব্যবহার ও চিরিত্রের উপর পৌলের সম্পূর্ণ বিশ্বাস আছে, তা থেকে বুঝা যায় পৌল তীতকে কত বিশ্বাস ও সম্মান করেন এবং নিজের প্রতিনিধি হিসাবে তার উপর পৌলের কত গভীর বিশ্বাস আছে।
নির্দেশনা
২ করিন্থীয় ৮:৬ পদ পড়ুন। ম্যাসিডোনিয়ার এবং করিন্থ শহরের মণ্ডলীগুলো একসাথে যিরূশালেমের মণ্ডলীর জন্য একটি দান তোলেন। তীতকে এই দান সংগ্রহ করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। চিন্তা করুন এই বিষয় থেকে তীতের জীবন, চরিত্র, মনোভাব ও ব্যক্তিত্ব সম্বন্ধে আরো কি কি শিখতে পারেন?
বিবেচনা করুন
প্রতিনিধি এবং দ্বন্দ্ব সমাধান করার ক্ষেত্রে তীতের উপর পৌলের গভীর বিশ্বাস আমরা আগের পদগুলোতেও দেখেছি। এখানে আরো পরিষ্কার হয় যে তীতের উপর পৌলের (এবং করিন্থীয় মণ্ডলীগুলোর) সম্পূর্ণ বিশ্বাস আছে এই বড় দান তোলার ক্ষেত্রে। তিনি সৎ, বিশ্বাসযোগ্য, তিনি টাকা-পয়সা ঠিকমত সামলাতে জানেন এবং এই ভূমিতা সততার সঙ্গে পূর্ণ করেন। তবুও করিন্থ মণ্ডলীর বিষয়ে একটি বড় দ্বন্দ্ব হয়েছিল, তবুও মণ্ডলী এখানে তীতের উপরে অনেক বিশ্বাস রাখেন।
তীতের চরিত্র এত চমৎকার, হয়তো একারণে পৌল তাকে “সত্যিকারের সন্তান তীত” বলেন এবং তাকে নতুন স্থাপিত ক্রীট দ্বীপের মণ্ডলীগুলোর দেখাশোনোর ভার দেন (৬৩-৬৩ খ্রীঃ, তীত ১:১-৫)। নতুন মণ্ডলীগুলোর মধ্যে নতুন নেতৃত্ব ঠিক করা, এই কাজ অবশ্যই সমজ ছিল না কিন্তু আবারও আমরা দেখি যে তীতের উপর পৌলের গভীর বিশ্বাস আছে।
নির্দেশনা
২ তীমথিয় ৪:১০ পদ পড়ুন। পৌল আবারও রোমে বন্দী (প্রায় ৬৪ খ্রীঃ)। এসময় সম্রাট নীরোর ভয়ংকর অত্যাচার চলছে এবং এই চিঠিটি হল মারা শহীদ মৃত্যবরণ করার আগে পৌলের শেষ চিঠি। এই পদগুলো থেকে আপনি তীতের জীবন, চরিত্র, মনোভাবে ও ব্যক্তিত্ব সম্বন্ধে আরো কি কি শিখতে পারেন?
বিবেচনা করুন
এই চিঠিতে পৌলের কষ্ট প্রকাশিত। তিনি স্থানীয় বিশ্বাসীদের থেকে বেশি সমর্থন বা সাহায্য না পাওয়ার কারণে নিরাশিত (২ তীম ৪:১৬)। দীমা নামে তার একজন সহকর্মী চলে যাচ্ছেন (২ তীম ৪:৯) এবং পৌলের অনেক ‘একা’ লাগে, শুধুমাত্র লূক তার সাথে আছেন (২ তীম ৪:১১)। পৌল তীমথিয়কে তার কাছে আসতে বলেন (২ তীম ৪:৯) জেনে যে তিনি আর বেশি দিন বাঁচবেন না (২ তীম ৪:৬-৮)।
যদিও তীতের উপস্থিতি অবশ্যই ভাল লাগত, পৌল বলতে পারে যে অনেক কর্মী (যেমন ক্রীষ্কেন্ত, তুখিক ও তীত) তার নির্দেশনা অনুসারে অথবা নিজে নিজে বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছেন। তীত দালমাতিয়ায় চলে গিয়েছেন। দালমাতিয়া হল গ্রীসের উত্তরে সাগরের পাড়ের এলাকা, যেখানে (যতদূর জানা যায়) আর কেউ পরিচর্যা করেন নি। পৌলের জন্য তা অবশ্যই অনেক সান্ত্বনার ও উৎসাহের বিষয় ছিল যে তার শিষ্যরা ও সহকর্মীরা এমন জায়গুয় চলে যাচ্ছেন যেখানে পৌল আর যেতে পারেন না। পৌল তীতকে বহুবছর ধরে শিষ্য ও সহকর্মী হিসাবে গঠন করেছেন, অর্থাৎ তার বিশ্বাস ও বিশ্বস্ততা এমন একজন প্রেরিত তৈরী করেছে যিনি এখন এমন এলাকায় যাবেন যেখানে পৌল কখনও পা দিতে সক্ষম হন নি।
৪র্থ ব্যাখ্যা প্রশ্ন তীত পুস্তক কোথা থেকে লেখা?
নির্দেশনা
তীত ৩:১২ পদ পড়ুন। পৌল কোথায় যখন তিনি তীত পুস্তক লেখেন?
বিবেচনা করুন
পৌল গ্রীস প্রদেশের নীকপলি শহরে আছেন (অথবা শীঘ্রই সেখানে পৌঁছাবেন)। তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে তিনি সেখানে শীতকাল কাটাবেন। আমাদের যুগেও নাবিকেরা ভূমধ্যসাগরে খুব সাবধানভাবে যান কারণ বছরে ৯ মাস, এবং বিশেষভাবে শীতকালের ৩ মাসে প্রায়ই ভয়ংকর ঝড় হয়। নীকপলি হল গ্রীসের পশ্চিম সাগর পাড়ে অবস্থিত একটি শহর (মাননিত্র দেখুন)। প্রেরিত পুস্তকে কোনো উল্লেক নেই যে পৌল কোনো সময়ে নীকপলিতে গেলেন। মনে রাখুন যে প্রেরিত পুস্তকে পৌলের প্রত্যেক বিষয় বর্ণনা নাও করেন। আরো মনে রাখুন যে প্রেরিত পুস্তকের বর্ণনা শেষ হওয়া পরে পৌল হয়তো আরো যাত্রায় বের হয়েছিলেন।

L